হজ ও উমরাহ পালনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তাওয়াফ। কাবা শরীফের চারপাশে
সাতবার ঘুরে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এই ইবাদতটি মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত
তাৎপর্যপূর্ণ। তাওয়াফের সময় দোয়া ও যিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ
করা যায়। এই ব্লগে আমরা তাওয়াফের সময় পড়ার দোয়া ও যিকির নিয়ে আলোচনা
করব।
তাওয়াফের সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে নির্দিষ্ট কিছু দোয়া বর্ণিত হয়েছে।
তবে প্রতিটি চক্করের জন্য আলাদা দোয়া নির্ধারিত নয়। তাওয়াফের সময় যে
দোয়াটি বেশি পড়া হয় তা হলো:
অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন,
আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন।
(সূরা বাকারা, আয়াত: ২০১)
কাবা তাওয়াফের ফজিলত সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)
বলেছেন, বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামাজ আদায়ের অনুরূপ। তবে তোমরা এতে
(তাওয়াফকালে) কথা বলতে পারো। সুতরাং তাওয়াফকালে যে ব্যক্তি কথা বলে সে যেন
ভালো কথা বলে। (তিরমিজি, হাদিস: ৯৬০)
তবে তাওয়াফের সময় যেকোনো দোয়া, যিকির বা কুরআন তিলাওয়াত করা যায়। যেমন:
সুবহানাল্লাহ
আলহামদুলিল্লাহ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আল্লাহু আকবার
তাওয়াফের সময় নিজের ভাষায় অন্তরের অনুভূতি অনুযায়ী দোয়া করা উত্তম, যা
আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য।
তাওয়াফের পরবর্তী আমল:
সাত চক্কর সম্পন্ন করার পর, মাকামে ইব্রাহিমের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায়
করা সুন্নত। এরপর যমযমের পানি পান করে সাফা-মারওয়া সাঈ সম্পন্ন করা হয়।
তাওয়াফের শিষ্টাচার ও করণীয়
তাওয়াফ করার সময় কিছু শিষ্টাচার ও করণীয় অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাওয়াফের শুরুতে কাবার দিকে মুখ করে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিয়ত করতে
হবে। হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করতে হয় এবং “বিসমিল্লাহ, আল্লাহু
আকবার” বলার পর সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ বা চুম্বন করা সুন্নত।
তাওয়াফের সময়ে করণীয় ও শিষ্টাচারসমূহ-
অযু ও পবিত্রতা: তাওয়াফের জন্য অযু থাকা আবশ্যক।
সতর ঢেকে রাখা: শরীরের নির্ধারিত অংশ ঢেকে রাখা জরুরি।
হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করা: তাওয়াফ শুরু হয় হাজরে আসওয়াদ থেকে।
প্রথম চক্করের শুরুতে "বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার" বলা সুন্নত।
বাম পাশে কাবা রাখা: তাওয়াফের সময় কাবা শরীফকে বাম পাশে রেখে ঘোরা
উচিত।
সাত চক্কর পূর্ণ করা: তাওয়াফে সাতটি চক্কর সম্পন্ন করতে হবে।
তাওয়াফ শেষে দু'রাকাত সালাত: তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহিমের কাছে
দু'রাকাত সালাত আদায় করা সুন্নত।
তাওয়াফের সময় কিছু সতর্কতা ও বিশেষ পরামর্শ
তাওয়াফের সময় যদি অযু ভেঙ্গে যায় তখন সম্ভব হলে মসজিদের ভেতরে দ্রুত অযু করে
আবার তাওয়াফ শুরু করবেন। যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই আবার শুরু
করবেন। কিন্তু যদি বেশি সময় ক্ষেপন করে ফেলেন বা বাইরে অযু করতে যান তবে আবার
পুনরায় নতুন করে তাওয়াফ শুরু করা উত্তম। তাওয়াফের সময় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো
স্মরণ রাখতে হবে -
উচ্চ স্বরে দোয়া না পড়া: উচ্চ স্বরে দোয়া পড়লে অন্য হাজিদের
মনোযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাই নিচু স্বরে বা মনে মনে দোয়া পড়া উত্তম।
দলবদ্ধভাবে তাওয়াফ না করা: দলবদ্ধভাবে তাওয়াফ করলে অন্যদের চলাচলে
সমস্যা হতে পারে। তাই ব্যক্তিগতভাবে তাওয়াফ করা উত্তম।
অপ্রয়োজনীয় কথা বলা থেকে বিরত থাকা: তাওয়াফের সময় অপ্রয়োজনীয়
কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
ধৈর্য ধারণ: তাওয়াফের সময় ধৈর্য ধারণ করুন এবং অন্যদের প্রতি
সহানুভূতিশীল থাকুন।
আল্লাহর স্মরণ: তাওয়াফের প্রতিটি পর্বে আল্লাহর স্মরণে মনোযোগ দিন
এবং দোয়া ও জিকিরে ব্যস্ত থাকুন।
আপনার হজ ও উমরাহ সফরের বিশ্বস্ত সঙ্গী: হলি হজ ও ওমরাহ বাংলাদেশ
হজ ও উমরাহর পবিত্র সফরে একজন বিশ্বস্ত সঙ্গীর প্রয়োজন, যারা আপনাকে সঠিক
দিকনির্দেশনা ও সহায়তা প্রদান করবে। হলি হজ ও ওমরাহ বাংলাদেশ,
বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত হজ ও উমরাহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, যা আপনার
ইবাদতকে সহজ ও সুন্দর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সেবাসমূহ: