![মসজিদে নববীর দরজাসমূহ মসজিদে নববীর দরজাসমূহ, মদিনা, সৌদি আরব](/images/banner/gates-of-masjid-an-nabawi.jpg)
মসজিদে নববীর দরজাসমূহ, মদিনা, সৌদি আরব
মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে মসজিদ নির্মাণ করেছেন (৬২২-৬২৩ খ্রিস্টাব্দ) সেটা হলো মসজিদে নববী। মসজিদ ও নববি দুটাই আরবি শব্দ। এ দু’শব্দের সম্মিলিত বাংলা অর্থ হলো, নবীর মসজিদ। কালের পরিক্রমায় এটার অনেক সংস্কার কাজ হয়েছে। বর্তমানে আধুনিক যে নকশা দৃশ্যমান তাতে দেখা যায় মসজিদে নববীতে কমবেশি ৪২ দরজা রয়েছে। মসজিদে নববীর দরজাসমূহ সম্পর্কে মানুষকে অবগত করতে সাজানো হয়েছে এ লেখা।
মসজিদে নববী নির্মাণের জন্য নাজ্জার গোত্রের দুই যুবক থেকে জমি ক্রয় করেছিলেন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। প্রায় সাত মাস সময় ব্যয় করে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। সে সময় মসজিদে প্রবেশের দরজা ছিলো ৩টা। সর্বশেষ মসজিদ-এ নববী সংষ্কার ও আধুনকায়নে কাজ করেন সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ ইবনে সউদ। বর্তমানে এটা রক্ষণাবেক্ষণের সকল দায়িত্ব সৌদি রাজ পরিবারের।
মসজিদে নববীর ৪২ দরজা
মসজিদে নববীর ৪২টি দরজা রয়েছে। প্রতি দরজার রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। একেক দরজা দিয়ে একেক কোণ থেকে মসজিদে নববীতে প্রবেশ করা যায়। নিচে মসজিদে নববীর দরজাসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হলো-
বাব আস-সালাম (দরজা নং ১)
সালাম আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো শান্তি। বাব আস-সালামের অর্থ হলো শান্তির দরজা। মসজিদে নববীর বড় দরজাগুলোর অন্যতম এটি। এই গেটটি মসজিদের অটোমান নামাজ হলের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। ইসলামের ২য় খলিফা ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ) তাঁর শাসনামলে আনুমানিক ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে (১৮ হিজরি) এটা নির্মাণ করেন।
বাব আবু বকর (দরজা নং ২)
আবু বকর (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সাহাবি। তাঁর নামেই এই দরজার নাম ‘বাব আবু বকর’ রাখা হয়েছে। এটি বাব আস-সালামের পাশে এবং মসজিদ কমপ্লেক্সের উত্তর দিকে অবস্থিত। নির্মাণের সময় এটা 'খুখা আবু বকর' নামে পরিচিত ছিল। সৌদি সরকার কর্তৃক প্রথম সম্প্রসারণের সময়, ‘খুখা আবু বকর' থেকে পরিবর্তন করে 'বাব আবু বকর (باب ابو بكر)' নামে এই দরজার নামকরণ করা হয়।
আর-রাহমাহ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ দয়া। এই শব্দ দিয়েই মসজিদে নববীর তৃতীয় দরজার নামকরণ করা হয়েছে। নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর জীবদ্দশায় এখানেই মসজিদের পশ্চিম দেয়াল স্থাপন করেছিলেন এবং দেয়ালটি আতকিয়া বিনতে আবদুল্লাহ বিন ইয়াজিদের সামনে অবস্থিত ছিল। তাই একে ‘বাব আতিকা’ও বলা হয়।
আল-হিজরা আরবি শব্দ। অর্থ হলো অভিবাসন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছেন। তাঁর হিজরতের ঘটনা উম্মতকে স্মরণ করিয়ে দিতেই এ দরজার নামকরণ করা হয়েছে ‘আল-হিজরা’ শব্দ দিয়ে। এটি মসজিদে নববী কমপ্লেক্সের দক্ষিণ প্রান্তে এবং বাব আর-রহমাহ এর বাম দিকে অবস্থিত।
মসজিদ আন-নববী থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মদিনার উপকণ্ঠে অবস্থিত ছিল ‘কুবা’ নামক ছোট্ট একটা গ্রাম। এই গ্রামের নামানুসারে মসজিদের ৫ নম্বর গেটের নামকরণ করা হয়েছে। এই গেটটি মসজিদের বাদশাহ ফাহাদ বিন আব্দুল আজিজ ব্লকের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত।
মসজিদে নববীর ছাদে যেতে হলে এই গেটে আসতে হবে। এখান থেকে এসকেলেটরের সাহায্যে যে কেউ মসজিদের ছাদে যেতে পারবেন।
বাব মালিক আল-সৌদ (দরজা নং ৭,৮,৯)
মালিক আল-সৌদ (ملك آل سعود) হলো সৌদি আরবের সাবেক একজন বাদশাহর নাম। তার নামানুসারে মসজিদে নববীর দরজাসমূহের অন্যতম এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। এই গেটের পাশে একটি একক মিনার রয়েছে যা মসজিদের ছয়টি উঁচু মিনারের একটি।
ইমাম বুখারী ছিলেন একজন ইসলামিক স্কলার ও হাদীস বিশারদ। বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ সহিহ বুখারির সংকলক তিনি। মসজিদ আল-নববীর ১০তম গেটের নামকরণ করা হয়েছে এই হাদীস বিশারদের নামে। এটি মসজিদের পশ্চিম প্রান্তে এবং বাব মালিক আল-সৌদ এবং বাব মালিক আব্দুল মজিদের মধ্যে অবস্থিত। এই গেট দিয়ে প্রবেশ করে মসজিদের লাইব্রেরিতে যাওয়া যায়।
‘বাব আল-আকীক’ মসজিদে নববী কমপ্লেক্সের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। ‘আল-আকীক’ মদিনার উল্লেখযোগ্য উপত্যকাগুলোর একটি। এই উপত্যকার নামানুসারে মসজিদের ১১ নম্বর গেটটির নামকরণ করা হয়েছে।
এই গেটটি মসজিদের উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থিত। সুলতান আব্দুল মজিদ ছিলেন একজন অটোমান সম্রাট। এই সম্রাটের নামে গেটটির নামকরণ করা হয়েছে। গেটটিতে পাঁচটি ছোট পোর্টাল (প্রবেশদ্বার), ২টি বড় পোর্টাল এবং দক্ষিণ দিকে একটি একক মিনার রয়েছে, যা মসজিদ আন-নবাবির ‘বাব উমর ইবন আল-খাত্তাবে’র সাথে মিলিত হয়েছে।
বাব উমর ইবনুল খাত্তাব (দরজা নং ১৬, ১৭, ১৮)
উমর ইবনুল খাত্তাব ( عمر بن الخطاب) হলেন নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সাহাবী। এই সাহাবির নামানুসারে মসজিদে নববীর দরজাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্যে এই গেটটির নামকরণ করা হয়েছে। ‘বাব উমর’ মসজিদ নববীর মূল কমপ্লেক্সের উত্তর-পশ্চিম কোণে উত্তর দেয়ালে অবস্থিত। আগ্রহী যে কেউএই গেট দিয়ে প্রবেশ করে মসজিদের গ্রন্থাগার পরিদর্শন করতে পারেন।
ইসলামের প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধের নাম হলো ‘বদর’। যে যুদ্ধে মুসলমানরা কুরাইশদের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন। এই যুদ্ধের নামানুসারে মসজিদে নববী কমপ্লেক্সের ১৯ নম্বর দরজার নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদের উত্তর দেয়াল এবং বাব মালিক ফাহাদ ও বাব উমর বিন খাত্তাবের মধ্যে অবস্থিত। এখানে একটি একক পোর্টাল (প্রবেশদ্বার) রয়েছে যার মাধ্যমে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
আল-ফাহাদ সৌদি আরবের একজন সাবেক বাদশাহর নাম। এই বাদশাহর নামেই ২০,২১ ও ২২ নম্বর ফটকের নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদের উত্তর দিকে অবস্থিত এবং উত্তর দিক থেকে এটি মসজিদ আন-নববীর প্রধান প্রবেশদ্বার। এছাড়াও, এটি মসজিদের বৃহত্তম গেটগুলির মধ্যে একটি।
উহুদ মদিনার একটি পাহাড়ের নাম। এখানে কুরাইশদের বিরুদ্ধে ইসলামের দ্বিতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। এই যুদ্ধের নামানুসারে দরজাটির নামকরণ করা হয়েছে। দরজাটি মসজিদুন নববীর উত্তর দিকের দেয়ালে অবস্থিত।
উসমান ইবনে আফফান (عثمان ابنِ عفان) (রা.) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর একজন সম্মানিত সাহাবী এবং ইসলামের তৃতীয় খলিফা ছিলেন। উসমান (রা.) এর নামানুসারে এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদ কমপ্লেক্সের পূর্ব কোণে অবস্থিত। এই গেটটি দিয়ে নারীরা তাঁদের জন্য মসজিদের সংরক্ষিত স্থানে সরাসরি প্রবেশ করতে পারেন।
বাব আলী ইবনে আবি তালিব (দরজা নং ২৮, ২৯, ৩০)
আলী ইবনে আবি তালিব হলেন নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একজন সাহাবি। তিনি ছিলেন একজন সাহসী যোদ্ধা এবং ইসলামের চতুর্থ খলিফা। এই খলিফার নামেই মসজিদে নববীর দরজাসমূহের অন্যতম এ দরজাটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত এবং মসজিদে নববীর অন্যতম বড় দরজা।
গিফার একটি আরব পৌত্তলিক গোত্রের নাম। এই গোত্রের অধিবাসীরা মদিনার কাছেই বাস করত। আবু যর গিফারী ছিলেন এই গোত্রের বাসিন্দা। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একজন সাহাবী। তার নামেই এ দরজার নামকরণ করা হয়েছে। গেটটি পূর্ব দিকে বাব-ই আব্দুল আজিজ এবং বাব-ই আলীর মধ্যে অবস্থিত। এটি মসজিদে নববীর একটি ছোট দরজা।
ইমাম মুসলিম ছিলেন একজন হাদীস বিশারদ ও ইসলামিক স্কলার। তার নামেই এই গেটের নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদের পূর্ব প্রাচীর বরাবর এবং আবু যর গিফারী গেটের কাছে অবস্থিত। এটিও মসজিদের ছোট গেটগুলোর একটি।
আবদুল আজিজ ছিলেন সৌদি আরবের সাবেক বাদশাহ। এই বাদশাহর নামেই দরজার নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদে নববীর বৃহত্তম দরজাগুলোর একটি। এ দরজায় পাঁচটি ছোট এবং দুটি বড় পোর্টাল রয়েছে। বাব আবদুল আজিজের দক্ষিণ দিকে রয়েছে একটি মিনার । এটি বাদশাহ ফাহাদ সম্প্রসারণের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত।
৩৬ নম্বর দরজায় এসকেলেটর রয়েছে। মসজিদে নববীর ছাদ দেখার আগ্রহ যাদের রয়েছে তাঁরা এসকেলেটরের সাহায্যে ছাদে চলে পারবেন। ঘুরে দেখতে পারবেন পুরো ছাদ।
বাব মক্কা (দরজা নং ৩৭)
বাব মক্কা বাদশাহ ফাহাদ সম্প্রসারণ ভবনের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। মক্কা শহরের নামে দরজাটির নামকরণ করা হয়েছে। দরজাটির দুটি অংশ রয়েছে, একটি মসজিদ সংলগ্ন এবং অন্যটি বাব কুবার সাথে যুক্ত।
বাব বিলাল (باب بلال), যার অর্থ বিলালের দরজা। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল ইবনে রাবাহ আল-হাবাশির সম্মানে দরজাটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি বাদশাহ ফাহাদ কর্তৃক মসজিদের নতুন সম্প্রসারণের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। বর্তমানে, এই গেটটি দিয়ে মসজিদে প্রবেশের জন্য চারটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। দ্বিতীয় সৌদি সম্প্রসারণের সময় যখন এটি প্রথম নির্মিত হয়েছিল, তখন এটি একটি ছোট গেট ছিল। সে সময় এখানে মাত্র দুটি প্রবেশদ্বার ছিলো।
নিসা একটি আরবি শব্দ। এই শব্দের অর্থ নারী। বাব উন নিসা (باب النساء), যার অর্থ মহিলাদের দরজা। এটি উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) এর সময় নির্মাণ করা হয়েছিলো। তখন এই গেট দিয়ে নারী-পুরুষ উভয়েই প্রবেশ করতো। কিন্তু উমাইয়া খলিফা উমর বিন আব্দুল আজিজের সময় এটি সংরক্ষিত ছিল এবং শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য ব্যবহার করা হতো। এটি মসজিদ আল-নাবাবীর পূর্ব প্রাচীর বরাবর অবস্থিত এবং তিনটি দরজার মধ্যে একটি, যা নবী মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সমাধির সবচেয়ে কাছে।
জিবরীল (আ.) একজন ফেরেশতার নাম। তার নামেই এই ফটকের নামকরণ করা হয়েছে। উল্লেখ আছে যে, জিবরীল (আ.) এই দরজা দিয়ে মসজিদে নববীতে প্রবেশ করতেন। এই দরজাটি ‘বাব উন-নবী’ নামেও পরিচিত। এটি বাব আল-বাকী এবং বাব আন-নিসার মধ্যে এবং নবীর মসজিদের অটোমান প্রার্থনা হলের পশ্চিম প্রাচীর বরাবর অবস্থিত।
বাব আল-বাকী (দরজা নং ৪১)
বাকী হল মদিনার একটি কবরস্থানের নাম যা মসজিদে নববীর কাছে অবস্থিত। এই কবরস্থানের নামেই গেটটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সমাধি কক্ষের কাছে অবস্থিত। গেটের উপরে একটি মিনার আছে। দুটি আরবি শিলালিপি রয়েছে, একটি লিন্টেলে এবং অন্যটি উপরের আর্কিট্রেভে। গেটের সম্মুখভাগ দুটি স্তম্ভ দ্বারা ঘেরা।
আইম্মাহ একটি আরবি শব্দ। এই শব্দের অর্থ নেতা। এই শব্দের নামে গেটের নামকরণ করা হয়েছে। এটি মসজিদের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত একটি ছোট গেট। এটি দিয়ে রওদায় প্রবেশ করা যায়। এই দরজাটি বাব উল-জানাইজ নামেও পরিচিত, যার অর্থ জানাযার দরজা।
আব্দুল মজিদ একজন উসমানীয় সুলতানের নাম, যার নামানুসারে মসজিদে নববীর দরজাসমূহের অন্যতম এ গেটটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি ছিলো মসজিদে নববীর উত্তর দিকের কেন্দ্রীয় ফটক। দ্বিতীয় সৌদি সম্প্রসারণের সময় এটি মসজিদ কমপ্লেক্সের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
আপনি কি এই দরজাগুলো পরিদর্শন করতে আগ্রহী?
হলি হজ অ্যান্ড উমরাহ বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত এবং নেতৃস্থানীয় ওমরাহ ট্রাভেল অ্যাজেন্সি। আপনি যদি মসজিদে নববীর দরজাগুলো পরিদর্শন এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে ব্যতিক্রমী পরিষেবা পেতে আজই এই এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করুন।
কল করুন